বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ নয়; নিরাপদ যাতায়াতে পরিকল্পিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরী

এনভায়রনমেন্টমুভ ডেস্ক

নিরাপত্তার নামে সাম্প্রতিক সময়ে মহাসড়কে ছোটযান চলাচল নিষিদ্ধকরণসহ বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। এর ফলে মানুষের যাতায়াত দুর্ভোগসহ এবং পণ্য পরিবহনে বিড়ম্বনা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব মহানগরী ঢাকাতেও পড়ছে। এই প্রেক্ষিতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে ০৪ আগষ্ট ২০১৫, মঙ্গলবার, সকাল ১১ টায় পবা কার্যালয়ে “নিরাপদ যাতায়াতে বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ নয়, পরিকল্পিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরী” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।

unnamed (4)

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মো: মারুফ হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, সহ-সম্পাদক স্থপতি শাহীন আজিজ, নির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৭ জুলাই ২০১৫ সড়ক নিরাপত্তা বিধানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ১ আগস্ট থেকে সারাদেশে জাতীয় মহাসড়কে থ্রি হুইলার অটোরিকশা এবং সকল শ্রেণীর অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ভাংচুর ও গুলি চালানোর মত ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় পর্যায়ে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে অসংখ্য মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। যাতায়াত নিরাপত্তা ও মানুষের মালামাল পরিবহন বিবেচনায় না নিয়ে অপরিকল্পিত যাতায়াত ব্যবস্থায় দূর্ঘটনায় প্রাণহানিসহ যাত্রী দুর্ভোগ চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

থ্রি হুইলার, অটোরিকশাসহ ছোট যানগুলির আমদানির অনুমোদন, রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স প্রদান করার সঙ্গে সরকারের কোন না কোন পর্যায়ের সংশ্লিষ্টতা লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু সে সময় এ বিষয়ে কোন বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়নি। তাই হঠাৎ করে কোন বিকল্প ছাড়াই এগুলি নিষিদ্ধ করায় স্থানীয় পর্যায়ে একদিকে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বারংবার এ ধরনের বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ সমস্যার সমাধান না করে নতুন নতুন সমস্যার জন্ম দিয়েছে।

নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ :

১.মহাসড়কের পাশে স্থানীয় যানবাহনের জন্য জায়গা তৈরি করা।
২.বিদ্যমান সড়কের চিহ্নিত ত্রুটি দূরীকরণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা ও যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা।
৩.পুরো যাতায়াত ব্যবস্থার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং তদারকির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি বৃদ্ধি করা।
৪.যাতায়াত ব্যবস্থায় কোন কার্যক্রম গ্রহণের পূর্বে সঠিকভাবে যাচাই বাছাই সাপেক্ষে অনুমোদন করা।
৫.সড়কপথের সম্প্রসারণ বন্ধ করে রেল ও নৌপথ পুনরুদ্ধার ও সম্প্রসারণ করা।
৬.যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারের গৃহীত সকল প্রকল্প ও কার্যক্রমে জাতীয় সমন্বিত বহুমাধ্যমভিত্তিক পরিবহন নীতিমালা, ২০১৩ এর অনুসরণ করা।
৭.মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩-এর অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত “মোটরযান (সংশোধিত) আইন, ১৯৮৮” এর পরিবর্তে নতুন করে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন করা।
৮.রাজনৈতিক, প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সারাদেশে যাতায়াত ব্যবস্থার সুষম উন্নয়ন করা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading