গ্রাম হোক সবুজ এবং শহর হোক সবুজ প্রযুক্তিবহুল-অধ্যাপক খবির
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রামীণ শক্তি, জাইকা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় দুটি বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন। গৃহস্থালির পচনশীল বর্জ্য থেকে এই প্লান্টের মাধ্যমে উৎপাদন করা হয় গ্যাস ও জৈব সার। অধ্যাপক খবির উদ্দিনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শামসুজ্জামান শামস
কেন এমন উদ্যোগ নিলেন?
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি সব সময়ই মনে হতো, পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ বর্জ্য কীভাবে সঠিকভাবে স্বল্প ব্যয়ে পরিশোধন ও ব্যবহার উপযোগী করা যায়। সে লক্ষ্যেই দীর্ঘদিনের কাজের ফসল হিসেবে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ১২ বছরের চিন্তা ও পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্যকে ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনার লক্ষ্যে এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
কোন উদ্দেশ্য নিয়ে আপনি এটি করেছেন?
এই প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে একাধারে বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হবে, জ্বালানির অভাব দূর হবে, জৈব সারের মাধ্যমে রাসায়নিক সারের চাহিদা পূরণ হবে। ময়লা-আবর্জনা পচার ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়, সেই মিথেন গ্যাসকে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিভিন্ন বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে এই প্রকল্প বিশ্বের উষ্ণতা কমাতে সহায়তা করবে।
সরকারের কাছে আপনার প্রত্যাশা?
পরিবেশ সংরক্ষণে এ মডেলটি বড় বড় শহর এবং উপশহরে স্থাপনের জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে ছোট ছোট বসতিতে স্থাপন করে জ্বালানির অভাব মেটানোও সম্ভব। গৃহস্থালির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নানাবিধ রোগ-জীবাণুর হাত থেকেও মানবজাতিকে রক্ষা করা যাবে। কৃষিকাজে সেচের জন্য যে বিদ্যুৎ প্রয়োজন, সেটাও ধানের খড় থেকে বায়োগ্যাস তৈরির মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব। দেশীয় প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমেই দেশকে স্বাবলম্বী করে তোলা সম্ভব।
প্রকল্পটি নিয়ে আপনার অভিমত কী?
কোনো কিছু উদ্ভাবনের জন্য সাধনা করে সে লক্ষ্যে পৌঁছানো দুরূহ কাজ নয়। এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তার অন্যতম উৎকৃষ্ট উদাহরণ। গ্রাম হোক সবুজ এবং শহর হোক সবুজ প্রযুক্তিবহুল।
সূত্রঃ প্রথম আলো, ২৯,০৩,২০১৩