হালদায় ডিম ছেড়েছে মা-মাছ প্রত্যাশিত ডিম না পাওয়ায় হতাশ সংগ্রহকারীরা

সুজিত সাহা চট্টগ্রাম

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মত্স্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে মা-মাছ। দুই দিন ধরে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে হালদার মা-মাছ ডিম ছেড়েছে। তবে প্রথম দফায় গত বছরের তুলনায় ডিমের পরিমাণ কম হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। এতে চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক রেণু পোনার কেজিপ্রতি দাম গত বছরের তুলনায় বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল রোববার সকাল থেকে বৃষ্টি, বজ্রপাত উপেক্ষা করে ডিম সংগ্রহ করছেন মত্স্যজীবীরা। হালদাপাড়ের দুই উপজেলাজুড়ে ডিম সংগ্রহ করেন এলাকাবাসী। তবে বিগত বছরের তুলনায় ডিম কম পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা। কারণ হিসেবে তারা হালদায় মা-মাছের সংখ্যা কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন।
রাউজান উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, হালদা নদীর পার্শ্ববর্তী গ্রাম মাদার্শা এলাকায় প্রথম ডিম ছাড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। দুপুর থেকে ডিম ছাড়তে শুরু করে মা-মাছ। এ সময় নদীতে অবস্থানরত সব নৌকা ডিম সংগ্রহ করতে পারেনি। ফলে এ বছর ডিমের পরিমাণ কম বলে তিনি জানান।
রোববার ভোর থেকেই রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ মাছের ডিম ছাড়ার নমুনা পেয়েছেন স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা। এক মাস ধরে ডিম সংগ্রহের আশায় পাঁচ শতাধিক জেলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এ প্রাকৃতিক মত্স্য প্রজনন ক্ষেত্র অবস্থান নেন। বেলা আড়াইটা থেকে ডিম ছাড়তে শুরু করে মা-মাছ। তবে এর মধ্যে মাত্র ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ নৌকা ডিম সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।
গত বছরের তুলনায় এ বছর ডিম ছাড়ার পরিমাণ কম হওয়ার কারণ হিসেবে হালদা গবেষক অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, প্রতি বছরই মা-মাছের সংখ্যা কমছে। এতে ডিম ছাড়ার পরিমাণও কমে আসছে। তবে এ বছর অনেক ডিম সমুদ্রে চলে গেছে। প্রশাসনের প্রস্তুতি ভালো থাকলে আরো    বেশি ডিম সংগ্রহ করা যেত বলে তিনি মনে করেন।
উপজেলা মত্স্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলাজুড়ে প্রায় ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ নৌকা ডিম সংগ্রহের জন্য অবস্থান নেয়। তবে গড়ে ৫০০টি নৌকা ডিম সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। প্রতিটি নৌকা গড়ে পাঁচ কেজি করে ডিম সংগ্রহ করেছে। এতে ডিম সংগ্রহের মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ কেজি।
রাউজান উপজেলার ডিম সংগ্রহকারী শ্রীধাম জলদাশ বলেন, ‘আমার পাঁচটি নৌকায় প্রায় পাঁচ বালতি ডিম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সোয়া এক কেজি থেকে দেড় কেজি রেণু পাওয়া যাবে। তবে আগের তুলনায় এ বছর ডিমের পরিমাণ কম।’
 সূত্রঃ বণিক বার্তা ৬/৫/২০১৩

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading