পান চাষে লাভবান সাতক্ষীরার কৃষক

সাতক্ষীরায় উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতের পান মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়। এ জেলার উৎপাদিত পানের ৭০ শতাংশই রফতানি হয়ে থাকে বলে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে। চলতি বছর সাতক্ষীরার সাত উপজেলায় প্রায় চার হাজার বিঘা জমিতে ঝাল, ভাবনা ও মিষ্টি জাতের পানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে তালা উপজেলায় প্রায় ৮০ শতাংশ এবং ২০ শতাংশ অন্যান্য উপজেলায় চাষ হয়েছে। তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের পানচাষী দ্বীনো বন্ধ কুমার জানান, চলতি মৌসুমে আট বিঘা জমির ওপর একটি বরজে পান চাষ করেছেন। এবার তার বরজে পানের ফলন খুবই ভালো হয়েছে।OLYMPUS DIGITAL CAMERA বাজারে পানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কাউন (১২৮০টি) পানের বাজারদর হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার স্থানীয় পাটকেলঘাটা বাজারে পান বিক্রি হয়। তিনি বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখানকার পান কেনেন। সপ্তাহে দুই দিন হাট বসলেও হাজার হাজার টাকার বিভিন্ন ধরনের পান কেনাবেচা হয়। এবার আট বিঘা জমিতে পান চাষ করে উৎপাদন খরচ বাদে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মতো লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। তবে অন্যান্য ফসলের তুলনায় পান চাষে খরচ বেশি হলেও এটি অনেক লাভজনক ফসল। এ ফসল উৎপাদন করে সংসার খরচ ছাড়াও ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার পাশাপাশি অন্যান্য ফসলি জমিও ক্রয় করেছেন ১০-১২ বিঘা। একই উপজেলার কুমিরা গ্রামের পানচাষী আল্লাদ কুমার দাশ জানান, গতবার বন্যার কারণে বরজের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় এবার চার বিঘা জমিতে এ ফসল আবাদ করেছেন। তবে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার পানের বাজারদর অনেক ভালো যাচ্ছে। বাজারে বর্তমান পানের যে দর যাচ্ছে তাতে সব খরচ বাদ দিয়ে ৫-৬ লাখ টাকা লাভ থাকবে তার। দ্বীনো বন্ধ ও আল্লাদ দাশের মতো এ উপজেলার অধিকাংশ কৃষকই পান চাষ করে থাকেন। এখানকার উৎপাদিত পান বিভিন্ন ব্যবসায়ী পাইকারদের হাতবদল হয়ে তা চলে যায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. সোলায়মান আলী জানান, পান রফতানির সম্ভাবনাময় জেলা সাতক্ষীরা। এখানকার উৎপাদিত পান বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। এ জেলার উৎপাদিত পানের চাহিদা ব্যাপক থাকায় কৃষকরা এটি চাষে খুবই আগ্রহ দেখান। তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় চার হাজার বিঘা জমিতে পান চাষ হলেও শুধু তালা উপজেলায়ই অন্তত সাড়ে তিন হাজার বিঘার মতো পান চাষ হয়েছে। তবে ফসলটি অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য উপজেলায়ও এর আবাদ বাড়ছে।

সূত্রঃ বনিক বার্তা ৮/০৫/২০১৩

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading