ডোরা কাঠবিড়ালী

কাজী নজরুল ইসলামের খুকু ও কাঠবিড়ালী কবিতার কাঠবিড়ালীর সাথে সবাই আমরা
পরিচিত আর  বন্যপ্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে সহজে যে প্রাণীটির দেখা পাওয়া যায়
তা হচ্ছে ডোরা কাঠবিড়ালী । বাংলাদেশে প্রাপ্ত ৯টি প্রজাতির কাঠবিড়ালীর
মধ্যে পাঁচ ডোরা কাঠবিড়ালী সবচেয়ে সহজলভ্য।

কাঠবিড়ালীর ছবিটি চুয়াডাঙ্গা থেকে তোলা
কাঠবিড়ালীর ছবিটি চুয়াডাঙ্গা থেকে তোলা

যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ এলাকার কৃষি খামার, বসতবাড়ির
মানবসৃষ্ট বাগান এবং ফসল ক্ষেতের আশেপাশে বিচরণ করতে দেখা  যায় । পাবনা
জেলার কিছু অংশে এবং ঢাকা  চিড়িয়াখানা ও রমনা পার্কেও এদের বিচরণ আছে।
এদেরকে সহজেই দেখা যায় কারণ,  এরা যে সব স্থানে বিচরণ করে, তার চারপাশ
ডাকাডাকিতে মুখর করে রাখে।
পাঁচ ডোরা কাঠবিড়ালীর ইংরেজী নাম Five striped Palm Squirrel বা Northern
Palm Squirrel বৈজ্ঞানিক নাম Funambulus pennantii ৷ এদের দেহ দৈর্ঘ্য ১৫
সেঃমি এবং লেজ ১৫ সেঃমি। পিঠে সাদাটে পাঁচটি অস্পস্ট ডোরার সাথে
প্রতিপাশে তিনটি লম্বা ডোরার পাশে হালকা বাদামী রঙের ডোরা থাকে। দেহের

নিচের অংশ ধূসর রঙের, লেজ ব্রাশের মতো ফোলানো। লেজে সাদা, কালো এবং
বাদামী রঙের মিশ্রন থাকে ৷ লোম গুলো সূর্যের আলো পড়লে চিকচিক করে।
এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফল ও বীজ, বাদাম, কচি পাতা,
গাছের বাকল, ফুল, খেজুরের রস, উইপোকা ও শস্য খায়।
শরৎকালে মাঝারি বা বড় গাছের ঘন ডালে সাধারনত পাটের আঁশ ও পাতা দিয়ে
গোলাকৃতির বাসা বানায়। বাসাতে একটি প্রবেশ পথ থাকে। ২ থেকে ৩টি বাচ্চা
প্রসব করে।
পাঁচ ডোরা কাঠবিড়ালী বীজের বিস্তরণ ঘটিয়ে, ফুলের পরাগায়ণ করে ও কয়েক
প্রজাতির পোকামাকড়ের বংশবৃদ্ধি নিয়ত্রনের মাধ্যেমে পরিবেশের উপকার করে।

লেখা ও ছবি: শিহান রহমান
বন্যপ্রাণী গবেষক, প্রাণীবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading