সবুজ অভিধানঃ আকাশের মুষ্ট্যাঘাত ( SkyPunch) !!

সিফাত তাহজিবা

মানুষ রৌদ্রজ্জল কিংবা মেঘলা আকাশ নিয়ে কতই না গল্প,কবিতা লিখল! অনেকে নীল আকাশের প্রেমে মুশগুল কেওবা আবার বর্ষার ভারী আকাশ দেখে বিমোহিত। কিন্তু, এই আকাশ যদি আপনাকে ক্ষ্যাপা পালোয়ানের মতন ইয়া আলি টাইপের ঘুষি মেরে বসে, তবে? গল্প,কবিতা সবতো জলে যাবে !!

হ্যাঁ,আকাশেরও ঠিকই মুষ্ট্যাঘাত করার সামর্থ্য রয়েছে আর এ জন্যেই এর নাম হয়েছে ‘Skypunch’ বাংলায় বলা চলে ‘আকাশের মুষ্ট্যাঘাত’ !!

স্কাইপাঞ্চ বা আকাশের মুষ্ট্যাঘাত একটি বিরল আবহাওয়া জনিত ঘটনা। তবে,কুসংস্কারাছন্ন কেউ কেউ একে ” the end of the world” বা পৃথিবীর অবসান বলেও মনে করেন!

ইংরেজীতে এর আরও অনেক নাম রয়েছে যেমন -‘fallstreak hole,hole punch cloud, punch hole cloud,canal cloud বা cloud hole’।

skypunch
ছবিতে মেঘের মাঝে স্কাইপাঞ্চ

আসলে এটি আর কিছুই নয়,অধিক উচ্চতার সিরো- কিউমিউলো (cirro-cumulo-stratus)বা ধূসর একগাদা মেঘের স্তর যা কিনা উপরে বরফের স্ফটিক তৈরি করে এরপর নিচে মেঘাবরণ কে অনেকটা ঘুষির আকারে সরিয়ে দিয়ে একটি গর্ত গঠন করে! যা আসলেই বড় অদ্ভুত!

আকাশে এ ধরণের গর্ত তৈরি হয় যখন মেঘের পানির তাপমাত্রা হিমাংকের নিচে থাকলেও বরফের কণার (Ice nucleation particle)অভাবে পানি জমাট বাঁধতে পারেনা। একে বারজেরন(Bergeron) প্রক্রিয়া বলে, এর জন্য মেঘে চলতে থাকা ডমিনো ইফেক্ট (Domino effect- একের পর এক সংঘটিত হতে থাকা চেইন বিক্রিয়া) ও বন্ধ হয়ে যায় এবং তৈরি হওয়া বরফ স্ফটিকের চারপাশে পানি বাষ্পীভূত হয় এবং এভাবে প্রায়ই আকাশে মেঘের মাঝে এমন গর্ত দেখা যায়। skypunch-5

নীচে কিছু Wispyগুচ্ছাকারে মেঘ দেখা যায় যেগুলো সম্ভবত ভারী বরফ স্ফটিক মাটিতে পৌঁছার আগেই বাষ্পীভূত হয়ে যায়।

আকাশে বিমান চলাচলের ফলে পাখার পেছনে অতি দ্রুত চাপ কমে গিয়ে এ Skypunch মাঝে মাঝে গঠিত হতে পারে!

এর জন্য এখন পর্যন্ত কোন বৈজ্ঞানিক শব্দ বা আবহাওয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূণ কোন প্রক্রিয়ার কথা কোথাও উল্লেখ নেই!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading