পাঁচ দফা দাবি ঘোষণায় শেষ হলো তিস্তা রক্ষার লংমার্চ
গতকাল শনিবার বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশ সমাজ-তান্ত্রিক দলের (বাসদ) পক্ষ থেকে তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ সম্পন্ন হয়। সারাদিন লংমার্চ সম্পন্ন হয়ে পাঁচ দফা কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে সন্ধ্যায় শেষ হয় তাদের উক্ত দিনের কর্মসূচি । লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ অতিক্রম করে সাধুর বাজারে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় লংমার্চ।
সমাবেশে ঘোষিত পাঁচ দফার মধ্যে রয়েছে ক্ষতিপূরণের দাবিতে কৃষক সমাবেশ, পরিবেশবাদী সংগঠন ও পানি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা, বাম নেতাদের আঞ্চলিক দেশগুলো সফর ইত্যাদি।
উজানে ভারতের একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করা বন্ধ এবং তিস্তাসহ সব আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য ভাগসহ ছয় দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে সিপিবি ও বাসদ এ লংমার্চ শুরু করে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারাজ অভিমুখে যাত্রা শুরু করে লংমার্চ।
দোয়ানী সাধুর বাজারে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা সাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাপনী সমাবেশে তিস্তা ঘোষণা পাঠ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ। এ সময় সিপিবির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের বাঁচার দাবি নিয়ে আমরা এখানে এসেছি। সিকিম, চীন, ভারত থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে এসব নদীর পানি বঙ্গোপসাগরে পড়ে। এমন ৫৪টি নদীর মধ্যে ৫১টিতেই ভারত আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে বাঁধ দিয়ে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কোনো দেশ ভাটির দেশের সঙ্গে আলোচনা না করে বাঁধ দিতে পারে না।নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ বাঁচতে পারে না।’
মার্চ শেষে ঘোষিত পাঁচ দফা কর্মসূচি হচ্ছে সেচের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে আগামী ৮ মে বৃহত্তর রংপুরে আঞ্চলিক কৃষক সমাবেশ, ভারতের সঙ্গে অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে আগামী ১০ মে ঢাকায় সব বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, পরিবেশবাদী সংগঠন, পানি বিশেষজ্ঞ, নাগরিক ফোরামের নেতাদের নিয়ে পরবর্তী করণীয় নিয়ে পরামর্শ সভা, অভিন্ন ৫৪ নদীর পানি হিস্যা আদায়ে আগামী জুন মাসে ঢাকায় আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক সেমিনার আয়োজন, পানির হিস্যা আদায়ে চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটান সফর এবং দেশজুড়ে সভা সমাবেশ অব্যাহত রাখা।
তিস্তার পানির ন্যায্য ভাগ দাবি করে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা গত ৮ থেকে ১০ এপ্রিল রাজধানী থেকে তিস্তা ব্যারাজ পর্যন্ত লংমার্চ করে। এ দাবিতে বিএনপিও ২২-২৩ এপ্রিল লংমার্চ করবে বলে জানা গেছে।