গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জিন্দাপার্ক বিষয়ে রাজউকের চুক্তিভঙ্গ

গত ০৩ এপ্রিল ২০১৪, বৃহস্পতিবার জিন্দা পার্কের মূল উদ্যোক্তাদের উচ্ছেদের জন্য রাজউক ২০ প্লাটুন পুলিশ, কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট সহযোগে অভিযান পরিচালনা করেছিল কিন্তু স্থানীয় জনগণ, পেশাজীবি, রাজনৈতিক ও পরিবেশবাদীদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে একটি সমঝোতামূলক সিন্ধান্তে উপনীত হন। সমঝোতার মূলকথা ছিল ‘অগ্রপথিক পল্লী সমিতি’ (রেজি: নং ঢ-০১০৮২) -কে জিন্দা পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে বহাল রাখতে হবে। সমঝোতার সিদ্ধান্ত বরখেলাপ করে রাজউক গত ১৬.০৪.২০১৪ ইং তারিখে দৈনিক কালের কন্ঠ, আমাদের সময়, জনকন্ঠ পত্রিকায় মিথ্যা বিবৃতি প্রচার করে। গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে যে, “বর্ণিত প্রেক্ষাপটে রাজউক জিন্দা পার্কটি গত ০৩.০৪.২০১৪ইং তারিখে সরেজমিনে আইনী ব্যবস্থার মাধ্যমে বিদ্যমান অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে রাজউকের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।” উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে রাজউক “অগ্রপথিক পল্লী সমিতির” অবদানের বক্তব্য এবং “অগ্রপথিক পল্লী সমিতি” কর্তৃক পরিচালনার বিষয়ে কোন বক্তব্য প্রকাশ না করে রাজউক চুক্তিভঙ্গের অপরাধ করেছে। আমরা রাজউকের এ ধরণের মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচিছ। আজ ২১ এপ্রিল ২০১৪, সোমবার, বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনে ঐক্য ন্যাপের অফিসে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবি, রাজনৈতিক এবং পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে উক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচযের্র সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, কলেজ বিশ্ববিদ্যাল শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নূর-মোহাম্মদ তালুকদার, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, পবার নির্বাহী সদস্য কাজী এনায়েত হোসেন প্রমুখ।IMG_20140421_152750

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়- প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা বিধ্বংসী একটি চক্রের অপরিণামদর্শি কর্মকান্ডের ফলে ঢাকা মহানগরীর উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, সবুজ পার্ক ও বিনোদনের স্থানসমূহ প্রতিনিয়ত সংর্কীণ হয়ে আসছে। এই সীমাবদ্ধতার মাঝেও নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় গত ৩৩ বছরে স্থানীয় এলাকাবাসী নিজেদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগ, মেধা আর শ্রমের মাধ্যমে তিলেতিলে গড়ে তুলেছে ২৫০ প্রজাতির ১০ হাজার গাছ-গাছালি পরিপূর্ণ লেক, টিলার অরণ্যে গড়া জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ জিন্দা পার্ক। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যবর্ধক ও পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন স্থাপনাসমেত দীর্ঘ দিনের আন্তরিক যতেœর ফসল এই পার্কটি হাজারো তরুণের স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন। যা সারাদেশের জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। এটি আজ ঢাকা মহনগরবাসীসহ সারা দেশের কর্মব্যস্ত জনগণের বিনোদন এবং মাঠ পর্যায়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের অন্যতম স্থান হিসেবে বিবেচিত।

মূল উদ্যোক্তাদের অপসারণ করা হলে পার্কটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হবে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ পার্ক ধ্বংস হয়ে যাবে। বিনোদন ও জ্ঞান আহরণের বিপরীতে পার্কটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। পূর্বাচল প্রকল্পে ভিটেমাটি হারা অনেক মানুষের জীবন জীবিকা ব্যাহত হবে। বিগত ৩৩ বছরের হাজারো মানুষের বিনিয়োগ, শ্রম, মেধার অপূর্ব নিদর্শন জিন্দা পার্ক রক্ষায় ও এর যাবতীয় রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব মূল উদ্যোক্তাদের কাছেই রাখতে হবে। ০৩ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে তীব্র প্রতিরোধ শেষে রাজউক কর্তৃপক্ষের সাথে প্রশাসন, পরিবেশবাদী এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতেকে পার্ক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে বহাল রাখার যে সমঝোতামূলক প্রতিপালনীয় নির্ধারিত হয় তা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য প্রকাশে রাজউকের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics