ফেসবুকে জনপ্রিয় সেই ২৭টি পরিবেশ সংগঠন ! পর্ব-২

সিফাত তাহজিবা

পরিবেশকে রক্ষা করার পূর্বশর্ত হলো পরিবেশ তথা প্রকৃতিকে ভালবাসতে জানতে হবে। প্রকৃতির মাঝে বাস করা ক্ষুদ্র পোকামাকড় থেকে শুরু করে প্রতিটি স্থলজ ও জলজ প্রাণীকে বেঁচে থাকার জন্য তাদের বাস্তুতন্ত্রের ক্রিয়াকলাপ সঠিক রাখা জরুরি, আর তার জন্য পরিবেশের সুরক্ষায় মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বে প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের এই পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। পরিবেশের সবকয়টি জীবনকে সজীব রাখতে গড়ে তোলা হয়েছে কিছু সংগঠন।

পাঠক,আসুন জেনে নেই সেই ২৭টি পরিবেশ সংস্থা সম্পর্কে এবং জেনে ফেলি, কেমনই বা তাঁদের কাজের ব্যাপ্তি !

৭ . ন্যাশনাল ওয়াইল্ড লাইফ ফেডারেশন :

1

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বৃহত্তম ব্যাক্তিগত অলাভজনক সংরক্ষণ সংস্থা এটি। প্রকৃতির সাথে মানুষের যোগসূত্র স্থাপন ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধের সোচ্চার সংস্থাটির কাজের মধ্যে আরও রয়েছে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার করা। এ দলটির সাম্প্রতিক কিছু অভিযানের মাঝে উল্লেখ্যযোগ্য হলো পরিবেশ আইন শক্তিশালীকরণ, উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বুনো মোষ উদ্ধার আর সবশেষে আছে শিশুদেরকে প্রকৃতির সান্নিধ্যে যতটা পারা যায় নিয়ে আসা।

৮. ডিফেন্ডার্স অব ওয়াইল্ড লাইফ :

2

 

জনপ্রিয়তায় ৮ নম্বর তালিকায় থাকা সংস্থাটিকে বাংলায় বলা হয় ‘বন্যপ্রানী রক্ষাকর্মী’ এক কথায় ‘বনের রক্ষক’। উত্তর আমেরিকার উদ্ভিদকূল এবং প্রাণিকূলকে রক্ষার প্রচেষ্টা হিসেবে এটি ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির সাফল্যের কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম অঞ্চলীয় একটি রাজ্য ইয়মিং এর কিছু ‘গ্রে উলভ’ নামক বন্য নেকড়েকে উদ্ধার কন ! এছাড়া সংস্থাটি বিপন্ন হয়ে যাওয়া তিমির বাসস্থান সুরক্ষাকরণ সহ রুখে দিয়েছে বিশ্বের কিছু গুরূত্বপূর্ণ জলাভূমির মধ্যে দিয়ে সড়ক পথ নির্মাণও।

৯.এনভায়রনমেন্টাল ওয়ার্কিং গ্রুপ :

3

 

আমেরিকার এই সংস্থাটির নামেই শোভা পাচ্ছে তাদের মূল উদ্দেশ্য। সংস্থাটির কৃষিতে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থাটি ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি আলোচিত প্রকল্পে কাজ করেছে এবং প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে; যার মধ্যে বিখ্যাত হল ‘Dirty Dozen’- যেখানে খাদ্যদ্রব্যের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেগুলোতে সবোর্চ্চ মাত্রায় কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। আরও কয়েকটি প্রকল্পের নাম হল ‘মোবাইল ফোনের বিকিরণ এবং স্বাস্থ্য’, ‘স্কিন ডিপ’ এবং ‘সানস্ক্রিন’।

১০. ওশ্যেন কনজারভ্যান্সি :

4

 

মহাসাগরগুলোর বৈচিত্র্যময় বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষায় কাজ করে আসছে ওশ্যেন কনজারভেন্সি। রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় পর্যায়ে মহাসাগর নীতির বাস্তবায়ন এবং বিশ্বের বৃহত্তম স্বেচ্ছাসেবী কাজ ‘বার্ষিক আন্তর্জাতিক উপকূলবর্তী পরিষ্করণ’ এই সংস্থাটি্র অধীনে হয়েছে (২০১৪ সালে ৬৪৮০০০’র অধিক অংশগ্রহণকারীদের সাথে); মহাসাগরীয় জলপথ থেকে ওশ্যেন কনজারভেন্সি গত ২৫ বছর ধরে আনুমানিক ১৪৪ মিলিয়ন পাউন্ড আবর্জনা পরিষ্কার করেছে।

১১. আফ্রিকান ওয়াইল্ড লাইফ ফাউন্ডেশন :

5

 

১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি আফ্রিকার বন্যপ্রাণী এবং ভূমি রক্ষায় নিয়োজিত নেতৃস্থানীয় একটি আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ সংস্থা। জনপ্রিয়তায় যদিও এটি ১১ নম্বরে অবস্থান করছে কিন্তু এর কাজের পরিসরকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। চোরাশিকারীদের হাত থেকে আফ্রিকার বন্যপ্রাণী বিশেষ করে হাতি, চিতাবাঘ, গন্ডার এবং জিরাফ সহ আরও প্রজাতি সংরক্ষণ করে আসছে এরা। দলটি অতি সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় গণ্ডারের শিং বাণিজ্য বৈধ করার একটি প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে।

১২ . সিয়েরা ক্লাব :

6

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিবেশ বিষয়ক ক্লাবটি গোটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন অলাভজনক সংস্থা, প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯২ সালে ! প্রায় ১২২ বছর ধরে এই সংগঠনটি পরিবেশ নিয়ে কাজ করে আসছে। পরিবেশের সুরক্ষায় কাজ করা নতুন সংস্থাগুলো এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবকদের অনুপ্রেরণা যোগাবে এই প্রাচীন সংস্থাটির ইতিহাস। মূলত নবায়নযোগ্য জ্বালানী এবং জলবায়ু পরিবর্তনই হল সংস্থাটির কর্মক্ষেত্র। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে তাঁদের দ্বারা চালিত প্রচারণা ‘বিয়্যন্ড কোল ক্যামপেইন’ এর মাধ্যমে প্রায় ১৮৫টি কয়লা প্লান্ট বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে; যার পুরষ্কার স্বরূপ সংগঠনটি ৩০ মিলিয়ন ডলার অনুদান পেয়েছে নিউ ইয়র্ক শহরের সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গের কাছে থেকে। ২০১৭ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক কয়লা প্লান্টগুলো রূদ্ধ করে দেওয়া অথবা তাদের কার্বন নিঃসরণ কমাতে বদ্ধপরিকর এই সংগঠনটি।

 

লেখাটির ১ম পর্ব পড়তে এখানে  ক্লিক করুন। 

(চলবে…)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *