সামাজিক বাবুইর বিস্ময়কর বাসা

বাবুই পাখিকে সুদক্ষ কারিগর বলা হলেও কম বলা হবে। অনেক পাখিই বাসা বানায় তবে বাবুই পাখির মত এত সুন্দর ও চমৎকার পাখি আর কোন পাখি বানাতে পারে না। আর সকল বাবুই পাখির মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার সামাজিক বাবুই বা Sociable Weaver এর বাসা হল সবচেয়ে আশ্চর্য এক পাখির বাসা। বোতসোয়ানার কালাহারি মরুভূমিতে এই পাখির বসবাস সবচেয়ে বেশী। 577262_412305308804864_1730683898_n

তাদের তৈরি এই বাসা পৃথিবীর অন্য সকল পাখির যে কোন সৃষ্টির চেয়ে বিশাল বড়। এক একটা বাসা এক একটা গ্রামের মত এবং শতাধিক পরিবার এই বাসায় বাস করে। একসাথে বাসা তৈরি করলেও প্রত্যেক জোড়া বা পরিবারের জন্য থাকে পৃথক কামরা বা কুঠরি।

প্রযুক্তির দিক থেকেও এই বাসা প্রকৃতির এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। এদের এই বাসায় দুই ধরনের ঘর বা কুঠরি থাকে। ভিতরের কুঠরিগুলি উষ্ণ থাকে ও বাহিরের কুঠরিগুলি থাকে শীতল। রাত্রি বেলা যখন তাপমাত্রা অনেক কমে যায় তখন বাবুই পাখিগুলি ভিতরের ঘরগুলিতে আশ্রয় নেয় যেখানে তাপমাত্রা থাকে ১৬-৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের প্রখর রোঁদে চরম গরমের সময় তারা নিচের ছায়ার কুঠরিগুলিতে আশ্রয় নেয় যেখানে তাপমাত্রা থাকে বিস্ময়করভাবে মাত্র ৭-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এই সামাজিক বাবুই পাখিগুলি তাদের এই বাসা মরুভূমির অন্যান্য পাখিদেরও মিলেমিশে ব্যাবহার করতে দেয় এবং সহবস্থান করে। কিন্তু মানুষ অনেক সময় অহেতুক কারণে বা শিকারের জন্য তাদের বাসায়ও হামলা চালায় নষ্ট করে দীর্ঘ দিনের কঠোর শ্রমে গড়া এই বাসা। এই সামাজিক বাবুই পাখিরা যুগযুগ ধরে বেঁচে থাকবে এটাই আমাদের কামনা।

মাইন রানা

Check Also

নাইট্রজেন চক্রের কথকতা, পর্ব-২

বাধাধরা নিয়মের পরেও লাগাম কেন হাতছাড়া এটা ধরতেই গবেষণা করেছেন ‘কলোরাডো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়’র গবেষকেরা। নাইট্রেট নিয়ে গবেষণা করলেও তারা কিন্তু অ্যামোনিয়ার বিষয়টি আসলে আগে বিবেচনায় আনেননি। ঝামেলাটা ধরা পড়ল সেখানেই। কৃষিক্ষেত্র থেকে নির্গত অ্যামোনিয়ার পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে জীবাশ্ম জ্বালানীকেও!

নাইট্রোজেন চক্রের কথকতা, পর্ব-১

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর যখন মানুষের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিন্তু ‘কার্বন চক্র’ই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দৃষ্টি কেড়ে নেয়।কিন্তু, এই বিপর্যয়ে সব দৃষ্টি যদি কার্বন চক্র একা কেড়ে নিয়ে থাকে তবে ওদিকে নিরবে-নিভৃতে কিন্তু ধ্বস নামিয়ে দিচ্ছে ‘নাইট্রোজেন চক্র’! আপনি তেমন একটা চিন্তিত না হলেও কিন্তু আপনার কর্মকান্ডের কারণে নাইট্রোজেন চক্রে সৃষ্ট সাম্যবস্থার বিপর্যয় আপনারই ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

3 comments

  1. পাখিরা বেঁচে থাকুক, আমাদের অস্তিত্বের স্বার্থেই!

  2. MD. MAHMUDUL HASAN

    @রায়হান— সহমত ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *