সমঝোতা অনুসারে নি:শর্তভাবে জিন্দা পার্ক ফিরিয়ে দেয়া হোক

৫ হাজার সদস্যের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ ৩৩ বছর যাবৎ পরিচালিত জিন্দা পার্কটি সারাদেশের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অনুকরণীয় অনন্য দৃষ্টান্ত। রাজউক পার্কটি দখলের মাধ্যমে ধ্বংসের পায়তারা করছে। রাজউকের হাত থেকে জিন্দা পার্ক রক্ষার দাবীতে স্থানীয় জনগণ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবি ও রাজনৈতিক এবং পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহ আন্দোলন করে আসছে। গত ০৩ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে রাজউক ২০ প্লাটুন পুলিশ নিয়ে জিন্দাপার্কের মূল উদ্যোক্তাদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করে। এর প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন ও প্রতিরোধের মুখে রাজউক সমঝোতা করতে বাধ্য হয়, তার সিদ্ধান্ত বরখেলাপ করে রাজউক জিন্দা পার্কে আনসার নিয়োগের পায়তারা করছে। সমঝোতা অনুসারে অবিলম্বে এবং নি:শর্তভাবে পার্কের ব্যবস্থাপনা মূল উদ্যোক্তাদের দেয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে প্রকাশ করা হোক। সেই সাথে পুলিশি উৎপাত বন্ধ করে পার্ক ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত রাজউকের অসাধু কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। আমরা মনে করি রাজউকের ঐসব অসাধু কর্মকর্তা গণবিরোধী কর্মকান্ডের মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আজ ০৯ এপ্রিল ২০১৪, বুধবার, বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনে ঐক্য ন্যাপের অফিসে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবি, রাজনৈতিক এবং পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে উক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।P1010066

সংবিধান প্রণেতা ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আসাদুউল্লাহ তারেক, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট এসএম এ সবুর, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম-আহবায়ক ড. অসিত বরণ রায় প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়- প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা বিধ্বংসী একটি চক্রের অপরিণামদর্শি কর্মকান্ডের ফলে ঢাকা মহানগরীর উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, সবুজ পার্ক ও বিনোদনের স্থানসমূহ প্রতিনিয়ত সংর্কীণ হয়ে আসছে। এই সীমাবদ্ধতার মাঝেও নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় গত ৩৩ বছরে স্থানীয় এলাকাবাসী নিজেদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগ, মেধা আর শ্রমের মাধ্যমে তিলেতিলে গড়ে তুলেছে ২৫০ প্রজাতির ১০ হাজার গাছ-গাছালি পরিপূর্ণ লেক, টিলার অরণ্যে গড়া জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ জিন্দা পার্ক। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যবর্ধক ও পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন স্থাপনাসমেত দীর্ঘ দিনের আন্তরিক যতেœর ফসল এই পার্কটি হাজারো তরুণের স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন। যা সারাদেশের জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। এটি আজ ঢাকা মহনগরবাসীসহ সারা দেশের কর্মব্যস্ত জনগণের বিনোদন এবং মাঠ পর্যায়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের অন্যতম স্থান হিসেবে বিবেচিত।

স্থানীয় জনগণের উদ্যোগে সারাদেশের জন্য অনুকরণীয় ও দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মডেল এ পার্কটি ২০০৮ সালে উচ্ছেদের মাধ্যমে রাজউক বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের গণ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট এলাকা পার্ক হিসেবেই বহাল রাখতে রাজউক বাধ্য হয়। রাজউক পুনরায় পার্কটি দখলের অপতৎপরতার উদ্যোগ নেয়ার প্রেক্ষিতে অগ্রপথিক পল্লী সমিতি মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে রিট দায়ের (রিট নং ১৭৩০/২০১৪) করে। মহামান্য হাইকোর্ট ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ তারিখে রুল জারি করেন। মহামান্য হাইকোর্টে রুল জারির পরও রাজউক জিন্দা পার্কের দখল নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এলক্ষ্যে রাজউক গত ০৩ এপ্রিল ২০১৪, বৃহস্পতিবার পার্কটির মূল উদ্যোক্তাদের উচ্ছেদের জন্য ২০ প্লাটুন পুলিশ, কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট সহযোগে অভিযান পরিচালনা করেছিল কিন্তু স্থানীয় জনগণ ও পরিবেশবাদীদের প্রতিরোধের মুখে একটি সমঝোতামূলক সিন্ধান্তে উপনীত হন। সমঝোতার মূলকথা ছিল ‘অগ্রপথিক পল্লী সমিতি’ (রেজি: নং ঢ-০১০৮২) -কে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে বহাল রাখতে হবে। সমঝোতা অনুসারে পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব মূল উদ্যোক্তাদের কাছে রাখার বিষয়টি লিখিতভাবে প্রকাশ, পুলিশি উৎপাত বন্ধ ও জিন্দা পার্ক ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত রাজউকের অসাধু কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবী জানান বক্তারা।

Check Also

মস্তিস্ক ভক্ষক অ্যামিবা !

এই রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে কোন স্পষ্ট ধারণা নেই। কিন্তু ল্যাবরেটরিতে অনেক ঔষধ  Naegleria fowleri  (নেগেইলারিয়া ফাউলিরি) এর বিরুদ্ধে কার্যকর। তবে, তাদের কার্যকারিতা অস্পষ্ট; কারণ প্রায় সব সংক্রমণই মরণঘাতি।

অসাধু ব্যবসায়ীক চক্রেই ভেজাল ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তা সাধারণ

পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউট এর ফল পরীক্ষার তথ্যানুযায়ীই বলতে হয় যে, এ দেশের ৫৪ ভাগ খাদ্যপণ্য ভেজাল এবং দেহের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর বলেই চিহ্নিত হয়েছে। সারা দেশ থেকেই স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের পাঠানো খাদ্য দ্রব্যাদি পরীক্ষাকালে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *